বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যার ফলে দেশের ১১টি জেলার ৭৭টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি ২০ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছে এবং এতে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় ৫৮৭টি ইউনিয়ন পানির নিচে চলে গেছে, যার ফলে প্রায় ১০ লাখ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে এবং প্রায় ৫১ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ছবিঃ সংগৃহীত |
### **বন্যাকবলিত জেলাগুলো:**
বন্যাকবলিত ১১টি জেলার মধ্যে রয়েছে:
1. ফেনী
2. কুমিল্লা
3. চট্টগ্রাম
4. খাগড়াছড়ি
5. নোয়াখালী
6. মৌলভীবাজার
7. হবিগঞ্জ
8. ব্রাহ্মণবাড়িয়া
9. সিলেট
10. লক্ষ্মীপুর
11. কক্সবাজার
### **মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি:**
বন্যার ফলে সাতটি জেলায় মোট ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জেলাভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যা হলো:
- কুমিল্লা: ৪ জন
- ফেনী: ১ জন
- চট্টগ্রাম: ৫ জন
- নোয়াখালী: ৩ জন
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ১ জন
- লক্ষ্মীপুর: ১ জন
- কক্সবাজার: ৩ জন
### **আশ্রয় ও ত্রাণকাজ:**
পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ৩,৫১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৩,০১,৯৯৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ২১,৬৯৫টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ত্রাণসেবা ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ৭৬৯টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে।
### **উদ্ধার কার্যক্রম:**
ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ছাত্রসমাজ এবং বিজিবি সমন্বয় করে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। ফেনীতে বিশেষভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী এবং জেলা সিভিল সার্জনের অধীনে চিকিৎসকরা সেবা প্রদান করছেন।
### **সরকারি পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা:**
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং কন্ট্রোলরুম চালু রেখেছে। এ সংক্রান্ত তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে যাতে তারা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিক্যাল টিম এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। উপদেষ্টা বর্তমানে ফেনীতে অবস্থান করছেন।
এই বন্যা পরিস্থিতি দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
No comments: