**দুর্যোগের রাতে পাহাদারদের জন্য মহানবীর সুসংবাদ**
ছবিঃ সংগৃহীত |
ইসলামে জনপদ পাহারা দেওয়ার গুরুত্ব এবং এর কল্যাণ সম্পর্কে নবী করিম (সা.)-এর হাদিসগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাহারাদারদের জন্য রয়েছে মহান প্রতিদান এবং উত্তম পুরস্কার, যা তাদের জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
১. **জনপদ পাহারার মর্যাদা**: নবী করিম (সা.) বলেছেন যে, ‘আমি কি তোমাদের কদরের রাতের থেকেও শ্রেষ্ঠ রাতের কথা জানাব না? সে ওই পাহারাদারের রাত, যে ভয়সংকুল স্থানে পাহারা দেয়, তার আশঙ্কা হয় যে সে হয়তো তার পরিবারে জীবিত ফিরতে পারবে না।’ (মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ২৪২৪; সহিহুত তারগিব, হাদিস : ১২৩২) এটি বোঝায় যে, জনপদ পাহারা দেওয়া এমন একটি কাজ যা শবেকদরের ইবাদত থেকেও শ্রেষ্ঠ।
২. **আল্লাহর পথে রাতজাগা**: ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘দুটি চোখকে আগুন স্পর্শ করবে না। এক চোখ যে আল্লাহর ভয়ে কান্না করে এবং আরেক চোখ যে আল্লাহর পথে রাতজেগে পাহারা দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৯) এটি পাহারাদারদের জন্য এক মহান প্রশংসার প্রমাণ।
৩. **জান্নাতের সুসংবাদ**: নবী (সা.) বলেছেন, ‘লাঞ্ছিত হোক দিনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম এবং শালের গোলাম। তাকে দেওয়া হলে সন্তুষ্ট হয়, না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। এরা লাঞ্ছিত হোক, অপমানিত হোক। (তাদের পায়ে) কাঁটা বিদ্ধ হলে তা কেউ তুলে দেবে না। ওই ব্যক্তির জন্য (জান্নাতের) সুসংবাদ, যে ঘোড়ার লাগাম ধরে জিহাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, যার চুল উষ্কখুষ্ক এবং পা ধূলি মলিন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮৮৭)
৪. **পাহারার গুরুত্ব হুনাইনের যুদ্ধের রাতে**: সাহল ইবনুল হানজালিয়া (রা.) হুনাইনের যুদ্ধের রাতে নবী (সা.)-এর কাছ থেকে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব পান। নবী (সা.) বলেন, ‘তুমি এ গিরিপথের দিকে খেয়াল করবে এবং এর শেষ চূড়ায় গিয়ে পাহারা দেবে। সাবধান! আমরা যেন তোমার অসতর্কতার কারণে ধোঁকায় না পড়ি।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫০১) পাহারাদার তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন এবং সকালে নবী (সা.)-কে জানায় যে, সে কোন শত্রু দেখতে পায়নি। নবী (সা.) তাকে বলেন, ‘তুমি তোমার জন্য (জান্নাত) অবধারিত করেছ, এরপর তোমার কোনো (অতিরিক্ত) নেক কাজ না করলেও চলবে।’
এই হাদিসগুলো নির্দেশ করে যে, জনপদ পাহারা দেওয়া শুধু একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়, বরং এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল যা অত্যন্ত সওয়াবপূর্ণ। পাহারাদারদের জন্য রয়েছে মহান প্রতিদান এবং জান্নাতের সুসংবাদ, যা তাদের কষ্টসাধ্য রাতের কাজকে মহান মূল্যায়ন করে।
No comments: