মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সম্প্রতি একটি ড্রোন হামলা হয়েছে, যা অত্যন্ত ভয়াবহ পরিণতি বয়ে এনেছে। সোমবারের এই হামলায় নারী, শিশু ও পুরুষসহ অনেক মানুষ নিহত হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালানোর অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা পালানোর সময় বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে একটি নদী পার হচ্ছে ছবিঃ সংগৃহীত |
### হামলার বিবরণ:
- **তথ্যসূত্র**: চারজন প্রত্যক্ষদর্শী, অ্যাক্টিভিস্ট ও কূটনৈতিকদের মতে, গত সোমবার এই ড্রোন হামলা চালানো হয়।
- **ক্ষতিগ্রস্তরা**: হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার দুই বছর বয়সী মেয়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
- **দায়িত্ব দাবি**: আরাকান আর্মি (এএ) এই হামলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু এএ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও এএ একে অপরকে দোষারোপ করছে।
### হামলার পরিণতি:
- **প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি**: বেঁচে থাকা তিন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, হামলায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী অন্তত ৭০টি লাশ দেখার দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে কাদামাটিতে বেশ কিছু লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
- **মোহাম্মদ ইলিয়াসের কাহিনী**: এক প্রত্যক্ষদর্শী, মোহাম্মদ ইলিয়াস, বলেছেন যে, হামলায় তার গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই বছরের মেয়ে আহত হয়ে পরে মারা গেছে। তিনি নিজে মাটিতে শুয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করেছেন।
### অন্যান্য বিবরণ:
- **নাফ নদে দুর্ঘটনা**: একই দিনে, মিয়ানমার থেকে পালানোর সময় নাফ নদে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা ডুবে মারা যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
- **ডক্টর উইদাউট বর্ডার**: এই সংস্থা জানিয়েছে যে, তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা ৩৯ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে, যারা কামানের গোলা ও বন্দুকের গুলির আঘাতে আহত ছিল।
- **ইউএনএইচসিআর**: জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র বলেছেন, তারা বঙ্গোপসাগরে নৌকা ডুবে শরণার্থীদের মৃত্যু এবং মংডুতে বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর বিষয়ে অবগত, তবে বিস্তারিত হতাহতের সংখ্যা বা পরিস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত নয়।
এই হামলার ঘটনা মিয়ানমারের বর্তমান মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে।
No comments: