Banner

ফারাক্কার সব গেট খুলে দেওয়ায় ফের বন্যার আশঙ্কা বাংলাদেশে

 ভারতের ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। এর ফলে এক দিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবেশ করবে, যা দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে।

ছবিঃ সংগৃহীত

### ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার পরিণতি


**১. গেট খোলার পরিমাণ ও পানি প্রবাহ:**

   - ভারতের ফারাক্কা বাঁধের মোট ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবেশ করবে। এতে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। গেটগুলো খোলার ফলে প্রতিদিন ১১ লাখ কিউসেক পানি বাংলাদেশে প্রবাহিত হবে, যা দেশের নদ-নদীর পানি প্রবাহকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে।


**২. বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা:**

   - **ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল:** ফারাক্কার গেট খোলার ফলে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, এবং মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলোতে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা এই নতুন পানি প্রবাহের কারণে আরও অবনতি ঘটতে পারে।


**৩. ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য:**

   - **ফারাক্কা বাঁধের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে** জানান, পানির চাপে ফারাক্কা ব্যারেজের ওপর বড় চাপ তৈরি হওয়ার কারণে ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এটি না করা হলে ব্যারেজে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক এবং ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এছাড়া, ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশকে বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে আগাম সতর্ক করেছে।


**৪. গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের সতর্কতা:**

   - **রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন** বলেন, "ফারাক্কার গেট খোলার খবরটি আমাদের জন্য বিপজ্জনক। এর ফলে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।" তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এতে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জসহ আশপাশের এলাকাগুলো প্লাবিত হবে।


### বাংলাদেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতি


**১. বর্তমান পরিস্থিতি:**

   - আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে চলমান বন্যায় ১১টি জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৫ লাখেরও বেশি মানুষ। এর আগের দিন, রবিবার, মৃতের সংখ্যা ছিল ২০ জন এবং ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ছিল ৫২ লাখ।


**২. সম্ভাব্য পরিণতি:**

   - ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ফলে নতুন করে যে পানি প্রবাহিত হবে, তা বাংলাদেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। 


**৩. সরকারের প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ:**

   - বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে ফারাক্কার গেট খোলার ফলে সৃষ্ট নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.