Banner

**"স্বৈরাচার নেমেছে আনসারের বেশে: সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সামরিক শাসন"**

 **বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ**

ছবিঃ সংগৃহীত

গতকাল রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সচিবালয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন। আনসার সদস্যরা দিনের বেলাতেই সচিবালয়ের প্রবেশদ্বারে অবস্থান করে এই অঞ্চলের চলাচল বন্ধ করে দেন। রাত ৯টা পর্যন্ত অবস্থান থেকে সরে না যাওয়ায়, আন্দোলনের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ের দিকে যেতে আহ্বান জানান।


এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী রাত নয়টার পর সচিবালয়ের দিকে চলে আসেন। প্রথমে আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করে, তবে শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়ায় আনসার সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ফটকে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল।


এই পরিস্থিতিতে আনসার সদস্যরা প্রকাশ্যে মাইকে হুমকি দিয়ে জানান যে, সচিবালয় থেকে কোনো অফিসারকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হবে না। সেনাবাহিনী গেইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে, অঘটন ঘটতে পারতো। আনসার সদস্যদের আচরণ ছিল উগ্র এবং তাদের শ্লোগানে সংযমের ছিটেফোঁটাও ছিল না।


রাত ১০টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। বিজিবি, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে মোতায়েন ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় আনসার সদস্যরা ধীরে ধীরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে শুরু করে। অনেক আনসার সদস্য মারধর, লাথি, কিল এবং লাঠিপেটার শিকার হন।


সকালে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। এক পর্যায়ে, তারা সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কিছু সময় পরই আবার আন্দোলন শুরু হয় এবং দাবির পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।


সচিবালয়ের সামনে অবস্থানের কারণে তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাদের উদ্ধার করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে যাত্রা শুরু করেন। এরপর, রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়, যাতে দুইপক্ষের ৪০ জনের বেশি আহত হন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.