Banner

বন্যার রাজনীতি: শেখ হাসিনার নীরব উল্লাস ও মানবিকতার অবমাননা

 **শেখ হাসিনার নিঃশব্দ উল্লাস: ফারাক্কার গেট খোলার পেছনের রাজনীতি**

ছবিঃ সংগৃহীত

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়া এবং এর ফলে বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া বন্যা পরিস্থিতি আমাদের মনে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই বন্যা শুধু প্রকৃতির নিষ্ঠুর রূপই নয়, এর পেছনে রয়েছে এক অদৃশ্য রাজনৈতিক খেলা, যার প্রভাব সরাসরি মানুষের জীবন ও সম্পদের ওপর পড়ছে। অথচ এই সংকটময় মুহূর্তে, দেশের নেত্রী শেখ হাসিনার মনে কী চলছে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।


#### **ফারাক্কার প্রভাব: প্রকৃতি নাকি রাজনীতি?**


ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। তবে, বাংলাদেশের দিকে এই পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের কোনও প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। এর ফলে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেক অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন, ফসল নষ্ট হয়েছে, ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে, এবং অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনাগুলোতে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা যেমন আছে, তেমনি আছে মানবসৃষ্ট রাজনৈতিক চক্রান্তের ছায়া।


#### **শেখ হাসিনার মনোভাব: এক অদৃশ্য উল্লাস**


বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এক বিতর্কিত অধ্যায় হয়ে আছে। তাঁর নেতৃত্বে দেশ নানা রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে, যেখানে জনগণের দুর্ভোগ এবং বেদনা কখনোই প্রাধান্য পায়নি। আজ যখন বাংলাদেশের মানুষ ফারাক্কার পানিতে ডুবে যাচ্ছে, তখন শেখ হাসিনার নীরবতা প্রশ্নের উদ্রেক করে। 


এই সময়ে, যখন তাঁর জনগণকে রক্ষা করার কথা ছিল, তখন তিনি এই সংকটকে কীভাবে দেখছেন? সত্যি কি তিনি এই দুর্যোগের সময়ে বেদনায় নিমজ্জিত, নাকি তাঁর মনে একটি নিঃশব্দ উল্লাস বিরাজ করছে? বন্যার কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ বিরোধীগোষ্ঠীর শক্তি কমছে, যারা তাঁর শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এমনকি, কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই বন্যা পরিস্থিতি তাঁর শাসনকে আরও সুসংহত করতে সহায়ক হয়েছে।


#### **রাজনৈতিক সুবিধা: নিপীড়নের একটি নতুন রূপ**


বাংলাদেশের জনগণের দুর্ভোগ তাঁর কাছে কতটা মূল্যবান, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। দেশের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দুর্বল করার জন্য যে কোনও সংকটকেই তিনি নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছেন, এমন অভিযোগ অনেকবার শোনা গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও তেমন কিছু ঘটছে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।


বন্যায় প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের প্রতি তাঁর সরকার কেমন আচরণ করছে, তা দেখে বোঝা যায় যে, এই বন্যা তাঁর জন্য রাজনৈতিকভাবে কতটা সুবিধাজনক। বন্যার ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো এবং জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হলেও, সরকার তেমন কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং, এই দুর্যোগকে পুঁজি করে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি সুযোগ হিসেবে দেখার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।


#### **নির্বিকার রাষ্ট্র: মানবিকতা কোথায়?**


এই ধরনের পরিস্থিতিতে একটি সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো তার জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তবে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং, তারা এই সংকটকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা এবং তাঁর দলীয় সদস্যরা হয়তো মনে মনে খুশি হচ্ছেন, কারণ এই বন্যা তাঁদের বিরোধীদের দুর্বল করে দিচ্ছে, এবং তাঁদের শাসনকে আরও সংহত করছে।


#### **উপসংহার: মানবতার অবমাননা ও রাজনীতির কূটচাল**


ফারাক্কার গেট খোলার ফলে সৃষ্টি হওয়া বন্যা পরিস্থিতি একদিকে যেমন প্রকৃতির বিপর্যয়, তেমনি অন্যদিকে এটি রাজনৈতিক স্বার্থের একটি খেলাও বটে। শেখ হাসিনার নীরবতা এবং তাঁর সরকারের কার্যক্রম দেখে মনে হয়, এই সংকট তাঁদের জন্য একটি রাজনৈতিক সুযোগ হিসেবে কাজ করছে। এমন অবস্থায়, জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়বে, যদি সরকার এই সংকটকে মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে এবং কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে।


এই প্রবন্ধটি শুধু একটি তত্ত্ব নয়, বরং এটি একটি আভাস যে, একটি সংকট কীভাবে রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে এবং কীভাবে একটি দেশের জনগণকে তাদের নেতার স্বার্থে বলি হতে হয়।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.