Banner

আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ: ভাইরাল ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণ

 ভিডিওটি সাভারের আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকায় ধারণ করা হয়েছে বলে অনেকেই দাবি করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের হেলমেট এবং ভেস্ট পরা এক ব্যক্তি আরেকজনের সহায়তায় নিথর এক যুবকের দুই হাত ধরে একটি ভ্যানে তুলছেন। ভ্যানে ইতোমধ্যেই কয়েকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং দেহগুলো থেকে ঝরে পড়া রক্তে সড়কের কিছু অংশ ভিজে গেছে। ভিডিওটি ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের দীর্ঘ এবং এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ: ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশর্ট সংগৃহীত


### **ঘটনার বিবরণ**:


1. **স্থানীয় সূত্রের তথ্য**: 

   - ভিডিওটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন 'ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লিমিটেড' অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের পাশের সড়কে ধারণ করা হয়েছে। 

   - কাছাকাছি একটি দোকানের মালিক ফাহিমা ভিডিওটি দেখে স্থানটি নিশ্চিত করেছেন, যা ঘটনাস্থলের সঠিকতা প্রমাণ করে।

   - ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওটি কোয়ার্টারের কাছাকাছি একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ধারণ করা হয়েছে।


2. **ভিডিওতে পুলিশের কর্মকাণ্ড**:

   - ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা মৃতদেহগুলোকে একটি ভ্যানে স্তূপ করে রাখছেন। তাদের মধ্যে একজন সাদাপোশাকে পুলিশের ভেস্ট এবং হেলমেট পরা।

   - স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার সাথে জড়িত একজন কর্মকর্তাকে চিনতে পেরেছেন অনেকে, যিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।


3. **পুলিশের সাথে সংঘর্ষ ও পরবর্তী ঘটনা**:

   - ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচার গুলি চালায়। এতে বেশ কয়েকজন নিহত এবং অনেকে আহত হন।

   - সেই রাতে আশুলিয়া থানার অদূরে নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী মহাসড়কের এক পাশে একটি পুলিশ লেখা পিকআপে আগুন দেয়। আগুনে অন্তত দুটি মরদেহ পুড়ে যায়।

   - থানার সামনে একটি মরদেহ এবং পদচারী সেতুতে ঝুলন্ত অবস্থায় দুই পুলিশ সদস্যের লাশও পাওয়া যায়। স্থানীয়রা ধারণা করেন, পিকআপে আরও পুড়ে যাওয়া মরদেহ থাকতে পারে।


4. **নিহতদের পরিচয় ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া**:

   - পুলিশের পিকআপে পুড়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে তার স্বজনরা শনাক্ত করেন। নিহত ব্যক্তি সাজ্জাদ হোসেন নামে একজন শিক্ষার্থী, যিনি ৫ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন। 

   - সাজ্জাদের মা শাহিনা বেগম জানিয়েছেন, পরদিন পিকআপ থেকে পাওয়া লাশের পকেটে থাকা আইডি কার্ড দেখে তারা তার ছেলের লাশ চিনতে পেরেছেন। 


5. **হতাহতের সংখ্যা ও হাসপাতালে ভর্তি**:

   - আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় হামলার ঘটনায় মোট ১৪ জন নিহত হন। এছাড়া আশুলিয়া থানা এলাকায় আরও তিনজন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।


6. **পুলিশের তদন্ত ও পদক্ষেপ**:

   - ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ জানান, ভিডিওটি পুলিশের বিশেষজ্ঞ টিম দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। 


### **সংক্ষেপে**:


এই ঘটনাটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক দিক তুলে ধরেছে। পুলিশের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মনে শোক এবং ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ঘটনা ও ভিডিওটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য কাজ করছে।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.