Banner

"গণতন্ত্রের সংগ্রামে ইস্পাত কঠিন ঐক্যের আহ্বান: ফখরুলের স্মরণ সভার বক্তব্য"

 **ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ফখরুলের বক্তব্য**

ছবিঃ সংগৃহীত

১৭ বছর ধরে গণতন্ত্রের সংগ্রামে বীর শহীদদের স্মরণে বিএনপি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একটি 'স্মরণ সভা' আয়োজন করেছে। এ সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা এবং হত্যা ও খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, তাদের ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থাকা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক এবং পুঙ্গ ও নিহত ব্যক্তিদের জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। 


**অনুষ্ঠানের পরিবেশ এবং ভুক্তভোগীদের বক্তব্য**


বৃষ্টি উপেক্ষা করে বেলা আড়াইটা থেকে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে স্মরণ সভায় আসেন। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদদের ছবি, নাম, এবং ঠিকানাসহ ফেস্টুন টানানো হয়। বিভিন্ন সময়ে নিহত, আহত, এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনেক ভুক্তভোগী পরিবার তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, যা সভায় উপস্থিত সবার আবেগকে নাড়া দেয়। 


**বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য**


মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "আমাদের যারা পঙ্গু হয়েছেন, যারা নিহত হয়েছেন, তাদের সকলকে রাষ্ট্রের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ এবং ভাতা দিতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।" তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। জনগণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কারের আশা করে। 


তিনি আরও বলেন, "আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু এখনো চারপাশে বিভিন্ন চক্রান্ত চলছে। আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইস্পাত কঠিন ঐক্য। সেই ঐক্যকে অটুট রাখতে হবে এবং কোনো মতেই চক্রান্তে পা দেওয়া যাবে না।"


**ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য**


ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা প্রকাশ করেন। এমআইএসটির ছাত্র আসহাবুল ইয়ামিনের বাবা বলেন, "পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ এর থেকে ভারী কোনো বোঝা নেই। আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই এবং শহীদের মর্যাদা দেয়ার আহ্বান জানাই।"


টাঙ্গাইলে দু’চোখ হারানো হিমেল আহমেদের মা নাসিমা আক্তার বলেন, "আমাদের পাশে আপনারা দাঁড়াবেন।" 

নিহত রিটন চন্দ্র শীলের মা রুবী রাণী শীল তার ছেলের নৃশংস হত্যার জন্য বিচার চান। 

ইমনের ভাই সুমন তার ভাইকে হত্যা করার বিচার চান এবং তিনি যেন বাংলায় সেই বিচার দেখতে পান। 


**অনুষ্ঠানে অন্য বক্তাদের বক্তব্য**


বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, "বিচার শুরু হয়েছে। এই বিচার এমনভাবে হবে যে আগামী ১০০ বছর তারা মীরজাফরে পরিণত হবে।" 


সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 


**সর্বশেষে বক্তব্য**


ফখরুল বলেন, "আজকে আমরা সবাই বলছি যে, আমরা স্বাধীন হয়েছি। হয়তো স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু এখনো চতুর্দিকে তাদের চক্রান্ত তারা বিভিন্নভাবে ছড়াচ্ছে এবং আমাদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।" তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আশা করেছিলাম, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। 


সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.