**বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
![]() |
ছবিঃ সংগৃহীত |
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীরা বাংলাদেশে পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে না। আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের পঞ্চম সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।"
### ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপ
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, "ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, এই প্রশ্ন জনগণের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। তবে পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে সরকার ভাবছে কীভাবে সেটাকে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে আমরা অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আওয়ামী লীগ বা তাদের সমর্থিত জোটের বিচার করার ব্যাপারে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। "বিচারের (ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনা) বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। কীভাবে বিচার হবে, সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় দ্রুত একটি রূপরেখা প্রকাশ করবে," যোগ করেন আসিফ মাহমুদ।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কার্যক্রম চালাতে পারবে কি না—এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এটি দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। যেহেতু আওয়ামী লীগ একটি গণহত্যা ঘটিয়েছে এ দেশে, সেই গণহত্যার দায় নিয়ে তারা কীভাবে ফিরবে বা তাদের ফিরতে দেওয়া হবে কি না, এটি দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। এটি জনগণের সিদ্ধান্ত।"
### গণভবন হবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, "গণভবন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে, তার সবকিছু সংরক্ষণ করার জন্য এটিকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।"
তিনি জানান, দ্রুতই এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। গণভবন বর্তমান অবস্থায় রেখে ভেতরে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে, যাতে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। এ বিষয়ে আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
### জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ
জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন জায়গার অভিজ্ঞতা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, "এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণপূর্ত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজটি সম্পন্ন করবে।"
তিনি আরও জানান যে, গণভবনকে জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে এবং জনগণের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে, যাতে সবাই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।
No comments: