**বিদেশি হস্তক্ষেপে ফ্যাসিস্ট শাসনের জন্ম: ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্য**
ড. আসিফ নজরুল, আইন উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিচার বিভাগের বিচারকদের স্মরণে আয়োজিত এক সভায় মন্তব্য করেছেন যে, বিদেশি হস্তক্ষেপের কারণে বিগত সরকারের শাসন ফ্যাসিস্ট রূপ ধারণ করেছিল। ২০০৫ সালে জঙ্গি হামলায় নিহত বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহমেদের স্মরণে আয়োজিত এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশি হস্তক্ষেপের ফলেই সরকারের ফ্যাসিস্ট চেহারা প্রকাশ পেয়েছিল।
এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভুঁঞা, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ আবু তাহের এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন।
ড. নজরুল বলেন, "জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের নৃশংসতার ফলে বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তখনকার সরকারের হাতে বিচারকদের হত্যার যে নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছিলো, তা মৌলবাদী ঘটনাগুলোর প্রচারকে বিদেশিরা আরো বাড়িয়ে আমাদের ফ্যাসিস্ট তকমা দেয়ার চেষ্টা করেছিল। বিদেশি হস্তক্ষেপকারীরা এদেশে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলো, যার পরিণতিতে দেশ ফ্যাসিবাদে আক্রান্ত হয়েছিল।"
ড. নজরুল আরো বলেন, "তারা সবসময় চেষ্টা করে বাংলাদেশকে হেয় করার এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। কিন্তু এখন এদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ, জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদকে ঠাঁই দেয়া হবে না। আমাদের দায়িত্ব হলো দেশকে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ থেকে মুক্ত রাখা, যাতে কোনো অভ্যুত্থান বা সম্ভাবনাকে কোনো দেশি বা বিদেশি শক্তি বিঘ্নিত করতে না পারে।"
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশে জঙ্গি হামলায় সোহেল আহমেদ এবং জগন্নাথ পাঁড়ে নির্মমভাবে নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য জেলা জজ আদালত ২০০৬ সালে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যার মধ্যে একজন পলাতক ছিল। অবশিষ্ট ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ কার্যকর করা হয়।
No comments: