Banner

**বকেয়া বেতনের দাবিতে ফের মহাসড়ক অবরোধ, শ্রমিকদের অবস্থান বেতন হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত অব্যাহত**

**দুই মাসের বেতন না পেয়ে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, প্রশাসনের আশ্বাসে আশ্বস্ত না হয়ে পুনরায় বিক্ষোভে নেমেছেন শ্রমিকরা; যানজটে চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ**

ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকদের অবরোধ কর্মসূচি চলছে, যার ফলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন-ভাতা এখনো পাননি, যা তাদের জন্য আর্থিক সংকট তৈরি করেছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে গাজীপুরের ভোগড়া কলম্বিয়া মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন শ্রমিকরা, যা টানা ৫৩ ঘণ্টা ধরে চলে।


এই সময়ের মধ্যে অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সংযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এবং সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। শহরজুড়ে যানজট তৈরি হয় এবং পণ্যবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে। প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আলোচনা এবং আশ্বাস দেওয়া হলেও শ্রমিকদের দাবি আদায়ে কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি।


গত রবিবার গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ মিয়া শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন যে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তাদের বেতন নিশ্চিত করা হবে। এরপরেই সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ শ্রমিকদের শান্ত করে অবরোধ প্রত্যাহারে রাজি করান।


তবে, এক ঘণ্টার মধ্যেই শ্রমিকরা আবার মহাসড়কে ফিরে এসে অবরোধ শুরু করেন। শ্রমিকরা জানান যে, তারা আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা বেতন হাতে পাবেন ততক্ষণ অবরোধ চলবে। শ্রমিকদের মতে, তাদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই মাসিক ব্যয় মেটানোর জন্য বেতনের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। গত দুই মাসের বেতন না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।


এছাড়া, গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার ওসি রাহেদুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় শ্রমিক প্রতিনিধি দলকে আলোচনার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তবে, সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়কেই অবস্থান করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন। শ্রমিকরা বেতন না পাওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলে জানান।


এই অবরোধে জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যানজটে আটকে থাকা মানুষদের কাজকর্ম, চিকিৎসাসেবা এবং জরুরি প্রয়োজন মেটাতে বেগ পেতে হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। পুরো এলাকাজুড়ে চাপা উত্তেজনা এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.