**অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কমানোর আহ্বান: দ্রুত নির্বাচনের পথে ড. ইউনূস**
ছবিঃ সংগৃহীত |
ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় জোর দিয়েছেন এবং এর দ্রুত সম্পন্নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আনতে হবে।" এই বক্তব্যের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সম্ভাবনাকে অস্বীকার করে তিনি নির্বাচনমুখী যাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে চেয়েছেন।
👉 উপদেষ্টাদের বিভ্রান্তি এবং নির্বাচনের আশাবাদ
ড. ইউনূসের বক্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে উপদেষ্টাদের একাংশের মধ্যে, যারা "আগে সংস্কার পরে নির্বাচন" প্রচারণার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ড. ইউনূসের এই পদক্ষেপের ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গতি আসবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার হবে।
👉💛 নির্বাচন প্রক্রিয়া ও জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা
দেশের জনগণ এবং নতুন ভোটাররা দীর্ঘদিন ভোটের সুযোগ না পাওয়ার কারণে আগামী নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হলে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কমবে এবং মানুষ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠবে। ঢাকার একটি কলেজের এক অধ্যাপক মন্তব্য করেছেন, "১৯৯১, ১৯৯৬, এবং ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্বল্প সময়ে নির্বাচন আয়োজন করেছিল; এখন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে এক বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।"
👉 ভারতের প্রভাব ও অন্তর্বর্তী সরকারের বাধ্যবাধকতা
বিরোধী রাজনৈতিক দলের মতে, ভারতের ষড়যন্ত্র ও তার নীলনকশার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকা দলগুলো দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ড. ইউনূস এই বিষয়ে সচেতন থাকার ওপর জোর দিয়েছেন এবং সতর্ক করেছেন যে, সংস্কার অজুহাতে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকা উদ্দেশ্য দেশের স্বার্থের পরিপন্থী। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার একটি রোডম্যাপ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
👉সংস্কার কমিশন গঠন এবং অগ্রগতি
ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের জন্য ১০টি পৃথক কমিশন গঠন করেছেন, যার মধ্যে পুলিশ, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু কিছু কমিশনে বিদেশি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে কতটা কার্যকরী হবে এই উদ্যোগ। ইতিমধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় সবার পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
👉রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা
সিপিবি, গণদল, এবং গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপের দ্রুত প্রকাশের দাবিতে একমত হয়েছেন। তাদের মতে, নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের স্বল্প মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা উচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাকিব আলীর মতে, "রোডম্যাপ ঘোষণা হলে দেশের অস্থিরতা কমবে এবং গণতন্ত্রের পথে ফিরতে সহায়তা করবে।"
👉💛 ড. ইউনূসের বক্তব্যের তাৎপর্য
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, "সংস্কারের গতি ঠিক করবে নির্বাচনের সময়সীমা। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত এবং নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য সব প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করতে হবে।" তাঁর এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গতিশীলতাকে ত্বরান্বিত করবে।
👉💛 গণমানুষের প্রত্যাশা
দেশের জনগণ এবং নতুন ভোটাররা একটি নিরপেক্ষ এবং অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের মতামত প্রকাশের সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সার্বিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
No comments: