Banner

**"ড. ইউনূস-ট্রাম্প সম্পর্ক: দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নতুন অধ্যায়ের সম্ভাবনা"**

 ড. ইউনূস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক:  

ছবিঃ সংগৃহীত

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক শুরু থেকেই কিছুটা উত্তপ্ত ছিল। ২০১৬ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ড. ইউনূস তাঁর কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি ট্রাম্পের বিজয়কে ‘সূর্যগ্রহণ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। সেই সময় ড. ইউনূস হিলারি ক্লিনটনের একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলেন এবং তার প্রচারণায় আর্থিক সহায়তাও করেছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিরোধের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ‘ওপেন সিক্রেট’ হিসেবে আলোচিত হয়ে আসছে।  


### সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনা:  

ড. ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ড. ইউনূস ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচনের পরপরই অভিনন্দন জানিয়ে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান, যা তাঁদের সম্পর্ক মেরামতের উদ্যোগের ইঙ্গিত বহন করে।  


বিশেষজ্ঞদের মতে, ড. ইউনূস ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মিটিয়ে নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে সক্ষম হবেন। ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, "ড. ইউনূস বাংলাদেশের পুনর্গঠনের জন্য কাজ করছেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দ্রুত মিটিয়ে ফেলবেন।"  


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব ট্রাম্প প্রশাসন উপেক্ষা করতে পারবে না। ড. ইউনূস এই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন।”  


### বাণিজ্য এবং পারস্পরিক স্বার্থ:  

যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। ২০২২ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। অস্ট্রেলিয়ার আইপিএজি এশিয়া-প্যাসিফিকের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনির খসরু বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ব্যবসা, উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি খাতে পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।”  


বিশ্লেষকদের মতে, নতুন মার্কিন প্রশাসনের অধীনে বাংলাদেশ ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা আশা করতে পারে।  


### ভবিষ্যতের সম্পর্কের গতিপথ:  

ড. ইউনূস এবং ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে যেসব জটিলতা রয়েছে, সেগুলো ধীরে ধীরে মিটিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করার সুযোগ রয়েছে। ড. ইউনূস ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদারের চেষ্টা করছেন। যদিও তাদের অতীত সম্পর্ক ছিল বিরোধপূর্ণ, বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশটির গুরুত্ব বাড়ছে।  


**উপসংহার:**  

ড. ইউনূস তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে উভয় দেশের স্বার্থে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বর্তমান ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সেই প্রচেষ্টার পক্ষে সহায়ক হতে পারে।  

No comments:

Banner

Powered by Blogger.