সকল ধর্ম ও মতের ঊর্ধ্বে জাতীয় পরিচয়:
বাংলাদেশি পরিচয়ে আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য।
ছবিঃ সংগৃহীত |
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংখ্যালঘু সমস্যা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে তিনি সকল ধর্ম ও মতের মানুষকে একই পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য করার আহ্বান জানান।
মূল বক্তব্যের সারমর্ম
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে নানা মত, ধর্ম, সংস্কৃতি ও রীতিনীতি থাকা সত্ত্বেও আমরা সবাই একই পরিবারের অংশ। পার্থক্যের পরেও জাতীয় পরিচয়ে আমরা সবাই বাংলাদেশি। এ জাতীয়তার ভিত্তিতে তিনি সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, শপথ গ্রহণের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের খবর শুনে তার মন খারাপ হয়েছিল। এজন্য তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বার্তা দেন যে, আমরা সবাই সমান অধিকার ভোগ করি এবং একই পরিবারের সদস্য।
তিনি জানান, দুর্গাপূজাকে জাতীয় উৎসবে রূপান্তরিত করতে সরকারের উদ্যোগ সফল হয়েছে, যা তাকে তৃপ্তি দিয়েছে।
তথ্য ও প্রতিকারের গুরুত্ব
ড. ইউনূস বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে প্রচারিত তথ্যের সত্যতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক সময় সরকারি তথ্য সঠিক নয় এবং কর্তার ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে উপস্থাপিত হয়। তিনি বলেন, প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং অপরাধের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে।
ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ আহ্বান
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের সাহায্য কামনা করে তিনি বলেন, তথ্যদাতার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্যই সংখ্যালঘু সমস্যার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সহায়ক হবে। তিনি সবার মতামত নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে চান।
একতার আহ্বান
ড. ইউনূস "নতুন বাংলাদেশ" গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমরা এক পরিবারের সদস্য। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের সঠিক তথ্য এবং সময়োপযোগী প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে।"
উপসংহার
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, তথ্য প্রবাহের সঠিকতা এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রতি তার অঙ্গীকার স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। তিনি সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে একত্রিত হয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
No comments: