Banner

**আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদীদের হামলা: পতাকা অবমাননা ও সম্পত্তি ধ্বংস**

ছবিঃ সংগৃহীত

 

আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা: বিস্তারিত প্রতিবেদন

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে ২ ডিসেম্বর, সোমবার বেলা দেড়টার দিকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বাংলাদেশি জাতীয় পতাকা টেনে নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং মিশনের সম্পত্তি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।


পূর্ব পরিকল্পিত বিক্ষোভ

ঘটনার সূত্রপাত হয় সংঘ পরিবারভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি থেকে। এই সংগঠনগুলোর মধ্যে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চ উল্লেখযোগ্য। সকাল ১০টায় মিশনের ৫০০ মিটার দূরে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

বেলা ১টায়, বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। মিশনের ২০০ মিটারের মধ্যে পৌঁছানোর পর, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাঁধার সম্মুখীন হয়। সেখান থেকে তারা 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান দিতে দিতে মিশনের মূল গেট পর্যন্ত এগিয়ে যায়।


মিশনে অনুপ্রবেশ ও ভাঙচুর

বিক্ষোভকারীদের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ডেপুটেশন দেওয়ার জন্য মিশনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এসময় মিশনের পক্ষে প্রথম সচিব মো. আল আমীন তাদের সাথে কথা বলছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে উত্তেজিত জনতা মিশনের মূল গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।

হামলার মূল ঘটনা:
  1. পতাকা অবমাননা:
    উত্তেজিত জনতা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টেনে নামিয়ে সেটি পদদলিত করে এবং ছিঁড়ে ফেলে।

  2. সম্পত্তি ধ্বংস:
    তারা মিশনের ফুলের টব ভেঙে ফেলে এবং মিশনের অন্যান্য অংশে ভাঙচুর চালায়।

  3. নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা:
    মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী যথাযথ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়। অভিযোগ উঠেছে, তারা হামলাকারীদের সহযোগিতা করেছে। মিশনের পেছনের দরজা খোলা রেখে বিক্ষোভকারীদের মূল ভবনের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়।

মিশনের সুরক্ষা:

মিশনের অপর এক নিরাপত্তা কর্মী পরিস্থিতি বুঝতে পেরে পেছনের দরজা বন্ধ করে দেন, যার ফলে মূল ভবনের সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।


পরিস্থিতির পর্যালোচনা

  • আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা:
    হামলার সময় তাদের ভূমিকা কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল।

  • কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন:
    এই হামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে একটি সরাসরি আঘাত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

  • বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগ:
    এ ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।


উপসংহার

এই হামলা শুধু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উপর নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক যোগাযোগ এই পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

আপনার আরো কোনো তথ্য বা বিশ্লেষণ দরকার হলে জানাবেন।

No comments:

Banner

Powered by Blogger.