💬কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে গেজেট প্রকাশ: ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
বাংলাদেশের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে মর্যাদা দিয়ে সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই ঘোষণার মাধ্যমে কবি নজরুল ইসলামের জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
প্রজ্ঞাপনের গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ:
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় যে,
- ১৯৭২ সালের ২৪ মে কলকাতা থেকে কবি নজরুল ইসলামকে সপরিবারে ঢাকায় আনা হয় এবং ধানমন্ডি ২৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়ি তার বসবাসের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
- ১৯৭৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
- একই বছরে একুশে পদকেও ভূষিত হন তিনি।
- মৃত্যুর পর তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
ঐতিহাসিক স্বীকৃতি:
প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয় যে, ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কলকাতার এলবার্ট হলে বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়সহ বহু গুণী ব্যক্তিত্ব কবি কাজী নজরুল ইসলামকে "জাতীয় কাণ্ডারী" এবং "জাতীয় কবি" হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় কবিকে জাতীয় কবি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এছাড়াও, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮-তে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এতদিন পর্যন্ত সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে এই স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়নি।
প্রজ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত:
কাজী নজরুল ইসলামের জাতীয় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতি একটি ঐতিহাসিক সত্য। জনগণের আবেগ ও প্রত্যাশার প্রতি সম্মান জানিয়ে ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় কবিকে ১৯৭২ সালের ৪ মে থেকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,
- কাজী নজরুল ইসলামকে ৪ মে ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
- এই ঘোষণা সকলের অবগতির জন্য গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
গুরুত্ব ও প্রভাব:
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের সাহিত্য, সংগীত, এবং সামগ্রিক সংস্কৃতিতে এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ স্থানে রয়েছেন। জাতীয় কবি হিসেবে তাকে গেজেট আকারে স্বীকৃতি প্রদান তার অবদানের প্রতি জাতির গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এই ঘোষণা নতুন প্রজন্মকে তার জীবন ও কাজ সম্পর্কে আরও অনুপ্রাণিত করবে এবং দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে শক্তিশালী করবে।
No comments: